সবাই মানুষের মন বুঝতে চায় সেই প্রাচীনকাল থেকেই। এধারা এখনো চলমান, হয়েছে আরো উন্নত।
মনোবিজ্ঞানের কল্যাণে আমরা মানুষের সাইকোলজি বোঝার উপায় গুলো সহজে জানতে পারছি।
যে উপায় গুলো জানে সে খুব সহজেই মানুষের মন বুঝে তার ইচ্ছাপূরণ করে নিচ্ছে।
আপনি এই ১৪টি ফ্যাক্ট জানার পর দেখবেন সবার সাথে কতটা সহজে চলতে পারবেন। আপনার
শারীরিক ও মানুষিক পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন।
যার কারণে ওই কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ কমে যায়, ফলে আপনার ওই সকল কাজের সফলতার
সম্ভবনা কমে যায়। এমনকি ওই কাজ আর করা কখনোই করা হয়ে ওঠে না। তাই কাউকে নিজের লক্ষ জানালেন তো আপনার সফলতা নিজেই ক্ষতিগ্রস্থ করলেন।
মানুষের সাইকোলজি বোঝার উপায় নিয়ে ১৪ টি ফ্যাক্ট
সাইকোলজির দিক দিয়ে মানুষ শরীর ও মন যুক্ত। যা আমরা অধিকাংশই জানিনা। আমরা
মানুষ হিসেবে কতটুকু নিজেকে জানি? এই প্রশ্নের উত্তরেই আমরা সকল উত্তর খুঁজে
পাবো।
- জীবনের লক্ষ্য ও সফলতা
- ভিন্ন ভাষায় সিদ্ধান্ত নেওয়া
- সূর্যের আলোতে সতেজতা
- ওভারস্লিপারস প্যারাডক্স
- রিল্যাক্স ঘুম
- সুঘ্রাণের স্মৃতি
- একটা প্রশ্ন করি
- মৃত ব্রেনে স্বপ্ন
- অনুরোধ করা
- অচেনাকে চেনা
- ব্রেইনের ফোকাস
- নার্ভেসের বন্ধু
- কনফিডেন্টলি মিথ্যা
- ধৈর্য ও সময়
ব্লগঃ মানুষের সাইকোলজি বোঝার উপায় |
জীবনের লক্ষ্য ও সফলতা
নিজের জীবনের লক্ষ কখনোই কাউকে বলতে হয়না, যখন আপনার নিজের জীবনের লক্ষ গুলো বলে
দিবেন তখন মানুষের ব্রেইনে কিছু হরমন নিশৃত হয়, যা সফলতা বা অর্জন পাওয়ার সমান আনন্দ বা তৃপ্তি
দেয়।
যখন কোনো ব্যাক্তি চুপচাপ থাকে, কোনো কারণ ছাড়াই ভাবনাচিন্তা করে। তারমানে সে
কোনো লক্ষ নির্ধারণ করে সফলতার পথে হাঁটছে। তাকে যদি আপনি প্রশ্ন করেন, "কি
ভাবেছেন?" তবে সে আপনার প্রশ্ন এরিয়ে যাওয়ার চেস্টা করবে। নয়তো বলবে, "কই! তেমন
কিছুনা......"
ভিন্ন ভাষায় সিদ্ধান্ত নেওয়া
নিজের মাতৃভাষায় যখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। তখন আমাদের ব্রেনে গুরুতর সিন্ধান্ত খুব স্বাভাবিক ভাবে আবেগকে বেশি গুরুত্ব দেয়।
তবে যদি অন্য কোনো ভাষায় চিন্তাভাবনা করি, তখন আমাদের লজিক্যাল অংশ বেশি সক্রিয়
থাকে। যার ফলে আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।
যে ব্যাক্তি কথা বলার মাঝে বিভিন্ন প্রয়োজনে মাতৃভাষা বাদে অন্য কোনো ভাষায়
কোনো উক্তি বা কথা বলে। তাহলে বুঝবেন, উক্ত বিষয়ে তার সিদ্ধান্ত প্রখর।
সূর্যের আলোতে সতেজতা
সারাদিন রুমের মধ্যে কাজ করার পর অবশ্যই খেয়াল করেছেন, আপনি অনেকটা ক্লান্ত
অনুভব করছেন।
তাই প্রতিদিন দিনের কোনো একটা সময় ১০ মিনিটের জন্য হলেও সুর্যের আলোতে যান।
সুর্যের আলো হাড়ের পাশাপাশি মন সুস্থ করতেও অনেক কার্যকারি।
সুর্যের আলো আমাদের হ্যাপি হরমন বৃদ্ধিতে সহায়ক।
যদি কাউকে দেখেন, মন খারাপ বা বিষণ্নতাপূর্ণ তাকে বাইরে থেকে ঘুরে আসতে বলুন।
ওভারস্লিপারস প্যারাডক্স
১০-১১ ঘন্টা ঘুমানোর পরেও অনেকে মনে করে থাকেন যে, তার ঘুম হইনি। অতিরিক্ত
ঘুমানোর কারণে না ঘুমানোর সমান প্রভাব ফেলে আমাদের দেহে ও ব্রেনে।
কারন অতিরিক্ত ঘুমানোর কারণে আমাদের শরীর আলাদা রকম চাপ অনুভুত করে। যার
কারণে শরীর দুর্বল হতে থাকে।
তাই অতিরিক্ত না ঘুমিয়ে পরিমিত পরিমান অর্থাৎ ৭-৮ ঘন্টা ঘুমিয়ে নিন, সুস্থ ও
সুন্দর জীবনযাপন করুন।
যদি কেউ আপনাকে বলে, সে অনেক ঘুমানোর পরও "দুর্বল লাগছে মনে হচ্ছে ঘুম হইনি!"
তবে আপনি ভেবে নিন, নিয়মমাফিক জীবনযাপন করেনা।
রিল্যাক্স ঘুম
যখন আপনার বিভিন্ন চিন্তার কারণে ঘুম না আসে। তখন বিছানা থেকে উঠে কাগজ ও কলম
নিয়ে বসে পড়ুন। এবার আপনার চিন্তাগুলোকে লিখে ফেলুন।
এরপর সহজ ও কঠিন কাজ গুলো আলাদা করে ফেলুন। দেখবেন অনেকটা চিন্তা কমে যাবে।
যার কারণে আপনি রিল্যাক্সে ঘুমাতে পারবেন।
কারো কাছে যদি শুনতে পান যে তার রাতে ঘুম আসেনা। তবে ভেবে নিন, তার কিছু
গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে তবে সে জানেনা কখন কোন কাজ করবে বা কিভাবে করলে করা সহজ
হবে।
সুঘ্রাণের স্মৃতি
মস্তিষ্কের স্মৃতি মনের রাখার অংশের সাথে ঘ্রাণ ইন্দ্রিয়ের সংযোগ রয়েছে, যার
ফলে পরিচিত ঘ্রাণ পুরোনো স্মৃতি জাগিয়ে তোলে।
তাই আপনার বিশেষ সময় ও স্মৃতি মনে রাখতে সুগন্ধি ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
যদি কারো কাছে তার প্রিয় সুঘ্রাণ সম্পর্কে প্রশ্ন করেন, তবে সুঘ্রাণ মনে করার
সাথে সে তার প্রিয় ঘটনার কথাও মনে করতে থাকবে। অনুভবে বুঝে নিতে পারবেন
বাকিটা। এইটা মানুষের সাইকোলজি বুঝার উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম ফ্যাক্ট।
একটা প্রশ্ন করি
“একটা প্রশ্ন করি” এমন প্রশ্ন আপনিও শুনে থাকবেন বা আপনিও অনেক সময় অন্য
কাউকে করে থাকবেন। যখন কাউকে এই প্রশ্ন করা হয়, তার সম্পৃতি ঘটে যাওয়া ঘটনা
গুলো মনে করে উত্তেজিত হয়ে ওঠে।
তাই "একটা প্রশ্ন করি" বলে তার দিকে লক্ষ করুন, বাক্তির ভাব-ভঙ্গিতেই অনেকটা
বুঝতে পারা সম্ভব।
মৃত ব্রেইনে স্বপ্ন
মানুষ মারা যাওয়ার পরও ৭ মিনিট পর্যন্ত সচল থাকে। এই ৭ মিনিট ধরে জীবণের
স্মৃতি গুলোকে পর্যায়ক্রমে স্বপ্নের মতো করে দেখা যায়।
জীবণ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখা যায় এই ৭ মিনিটে বলে মনোবিজ্ঞানীরা দাবি
করছে।
অনুরোধ করা
আপনি যদি কাউকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি এই কাজটি করে দিতে পারবেন কিনা, তবে না
উত্তর আসার সম্ভবনা অনেকখানি থাকবে। তাই জিজ্ঞেস না করে তাকে অনুরোধ করুন।
কারন অনুরোধ করলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ না করতে পারেনা।
অনুরোধ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন দেখবেন, আপনার দৈনন্দিনের কাজ গুলো কিছুটা হলেও
সহজ হচ্ছে।
অচেনাকে চেনা
যদি কাউকে চিনতে চান কেমন প্রকৃতির ব্যাক্তি, তাহলে তার থেকে বয়সে বা মানে
নিচু ব্যাক্তির সাথে কথা বলার ও আচরণ গুলো লক্ষ্য করুন। তাহলেই সুন্দরভাবে
অচেনাকে চিনতে পারবেন।
আপনি চাইলে লক্ষ করতে পারে, তার ছোট ভাইবোনের সাথে কীরূপ আচরন করছে। তাহলে
খুব সহজে চিনে যাবেন ব্যাক্তিটা কতটা ভালো মনের অধিকারী।
ব্রেইনের ফোকাস
আমাদের ব্রেইন কখনই মাল্টি টাস্ক বা একই সাথে অনেক গুলো কাজ করতে পারেনা।
আপনি হয়তো ভাবছেন, আপনি একসাথে অনেক গুলো কাজ করতে পারেন, যেমন, খেতে খেতে
টিভি দেখা, গান শুনতে শুনতে কাজ করা।
আসলে আমরা যেসকল কাজের সাথে অভস্ত সেই সকল কাজ ব্রেইন ব্যবহার ছাড়াই করতে
পারি অনেকটা তাই ওই গুলো সহজেই করা সম্ভব হয়। তবে যে কাজ গুলোতে ব্রেইন
প্রয়োজন হবে ওই সকল কাজ কখনই একসাথে অনেক গুলো করতে পারবেন না।
তাই একটা কাজে মনযোগী হোন।
খেয়াল করবেন যে সকল ব্যাক্তি অনেক গুলো কাজ করছে, সে অধিকাংশ কাজ শেষই করতে
পারেনা। তাদের ব্রেনের ফোকাস ছড়িয়ে ছিটিয়ে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়।
নার্ভাসের বন্ধু
যখন আপনি কোনো কারণে নার্ভাস ফিল করছেন, তখন এমন কোনো বন্ধুর কথা ভাবতে শুরু
করুন, যার সাথে আপনার অনেক দিন দেখা হয়না। দেখবেন আপনার ব্রেইন কিছু সময়ের
জন্য রিল্যাক্স হয়ে যাবে। যার কারণে আপনার নার্ভাস অনেকটা কেটে যাবে।
যারা নার্ভাস ফিল করে তাদের মনবল পাওয়ার মতো লোকের অভাব আছে। তাদেরকে কেউ
সাহায্য করতে চায়না।
কনফিডেন্টলি মিথ্যা
মিথ্যা কথা কেউ যখন বলে খেয়াল করবেন, সে হাত বা পা নাড়িয়ে কথা বলছে, অন্যদিকে
মিথ্যা বলার সময় সামনে থাকা ব্যাক্তির চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারেনা।
ব্যাপার টা এমন যে, তার মন মিথ্যা বলার জন্য আশ্বাস দিলেও তার মস্তিষ্ক তখন
গিল্টি ফিল করা শুরু করে, যার কারণেই চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারেনা।
যারা অনেক দিন ধরে মিথ্যা বলার চর্চাতে এগিয়ে তারা অনেক সময় চোখে চোখ রেখেও
মিথ্যা বলতে পারে। এই ধরণের মানুষ থেকে দূরে থাকাই ভালো।
উপরের লক্ষ্মণের মাধ্যমেই মিথ্যাবাদী মানুষ চিনতে পারবেন।
ধৈর্য ও সময়
গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলো অবশ্যই দিনের শুরুতে বা শেষ অংশে শুরু করবেন। এতে
আপনার সফলতা পাওয়ার সম্ভবনা ৮০%
জীবণের যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে অবশ্যই যতটুকু সম্ভব সময় নিয়ে উত্তর
নিবেন। তাহলে প্রশ্নটির উত্তর সম্পর্কে চিন্তা করার ও উত্তর সাজানোর জন্য
পর্যাপ্ত সময় পেয়ে যাবেন।
যার কারণে আপনার সকল সিদ্ধান্ত হবে আরো সুন্দর আরো সহজ।
খেয়াল করবেন, যে কথা শুনেই উত্তর দেয়, তার কাজ কর্মে ব্যাঘাত হয়।
মনোবিজ্ঞানের দিক দিয়ে মানুষের মন বোঝার উপায় সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হলো, যা
আপনার ব্যাক্তিগত জীবণে ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এখানের ফ্যাক্ট গুলোকে আপনার
বুঝার সুবিধার্থে কিছুটা সহজভাবে প্রকাশ করা হয়েছে, তবে আপনি দৈনন্দিন জীবণের
অন্যান্য ক্ষেত্রেও মিল রেখে কাজে লাগাতে পারেন।
মেয়েদের ৩৫টি গোপন সাইকোলজি কথা জেনে নিন মেয়েদের সম্পর্কে কিছু মনস্তাত্ত্বিক কৌশল