তথ্যপূর্ণঃ কিশোরগঞ্জ কিসের জন্য বিখ্যাত - WikiJana.Com™

তথ্যপূর্ণঃ কিশোরগঞ্জ কিসের জন্য বিখ্যাত

কিশোরগঞ্জ কিসের জন্য বিখ্যাত তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনার জেলা সম্পর্কে জানুন কেন আপনার জেলা বিখ্যাত।
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated
কিশোরগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের একটি অন্যতম ঐতিহ্যবাহী জেলা। কিশোরগঞ্জ জেলা ঢাকা বিভাগের সর্বশেষ ও দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা তাছাড়াও এই ব্লগে আমরা কিশোরগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত তা নিয়ে বিস্তারিত জানবো।

কিশোরগঞ্জ কিসের জন্য বিখ্যাত

আস্‌সালামু আলাইকুম! আশা করি আল্লাহর রহমতে আপনি ভালো আছেন। 🥰 আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আজকের Topic এ আপনাকে স্বাগত! উইকিজানা ব্লগে ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিষয়ক আপডেট থাকতে গুগল নিউজে ★ Follow করুন।

কিশোরগঞ্জ জেলার প্রাচীন নাম জঙ্গলবাড়ি। ইতিহাসবিদদের ধারণা ও জনশ্রুতি অনুযায়ী জানা যায় যে ষষ্ঠ শতকে বত্রিশের বাসিন্দা কৃষ্ণদাস প্রামাণিকের পুত্র কিশোরগঞ্জ জেলার জমিদার ব্রজকিশোর মতান্তরে নন্দকিশোর প্রামাণিকের নাম অনুসারে কিশোরগঞ্জ জেলার নামকরণ করা হয়। নন্দকিশোর প্রামাণিক ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে একটি  হাট বা গঞ্জ প্রতিষ্ঠা করেন। নন্দকিশোর নামের 'কিশোর' আর তাঁর প্রতিষ্ঠিত 'গঞ্জ' যোগ করে 'কিশোরগঞ্জ'  নামকরণ করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত
কিশোরগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের নদী বিধৌত একটি জেলা। কিশোরগঞ্জ জেলার উত্তরে ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, ও সুনামগঞ্জ অবস্থিত। দক্ষিণে নরসিংদী, পূর্বে হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং পশ্চিমে গাজীপুর ও ময়মনসিংহ জেলা অবস্থিত।

"কিশোরগঞ্জ" নামটি শুনলেই মনে পড়ে যায় নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা। কিশোরগঞ্জ জেলার নীতিবাক্য হলোঃ
উজান-ভাটির মিলিত ধারা, নদী-হাওড় মাছে ভরা
বাংলাদেশের সবগুলো জেলার মধ্যে এই কিশোরগঞ্জ জেলাটিতে যেনো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপার মহিমায় ভরপুর। হাওড়-বাওড় সমতলভূমির এক বৈচিত্র্যময় ভূ-প্রকৃতি বিরাজ করছে এই কিশোরগঞ্জ জেলায়। কিশোরগঞ্জ জেলার মাটির পরতে পরতে লুকিয়ে আছে আমাদের অতি পরিচিত লোক-সংস্কৃতি।

কিশোরগঞ্জ জেলার সুস্বাদু বালিশ মিষ্টি, নকশি পিঠা ও শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান এর জন্য বিখ্যাত। তাছাড়াও আরো বিভিন্ন কারণে এই কিশোরগঞ্জ জেলা বিখ্যাত। 

আরো কোন কোন জন্য কিশোরগঞ্জ বিখ্যাত

কিশোরগঞ্জ জেলায় রয়েছেন বিভিন্ন পর্যায়ের সুখ্যাতির বিভিন্ন ব্যাক্তি যার মধ্যে অন্যতমঃ
  • চিত্রশিল্পী জয়নুল আবেদীন
  • বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা সেতারা বেগম
  • ভাষা ও সাহিত্যিক বিখ্যাত ব্যক্তিত্ত্ব
  • ইতিহাসবেত্তা, আন্দোলন সংগ্রামী নেতৃবৃন্দ
  • বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ
  • বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ত্ব, শিল্পপতি, শিক্ষাবিদ সহ অন্যান্য স্বনামধন্য বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ।

কিশোরগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক স্থাপত্য

কিশোরগঞ্জ জেলায় কতকগুলো বিখ্যাত ঐতিহাসিক স্থাপত্য রয়েছে বিশেষ কিছু স্থাপত্য ও ঐতিহাসিক স্থান নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলোঃ

এগারসিন্দুর দুর্গ

কিশোরগঞ্জ জেলায় পাকুন্দিয়া উপজেলা সদর থেকে ৭ কি.মি. দূরত্বে নদী পার হলেই প্রথমে যেটি চোখে পড়বে সেটি হলো এগারসিন্দুর দুর্গ। এগারসিন্দুর দূর্গটি ষোলো শতকের শেষ দিকে বার ভূঁইয়া নেতা ঈশা খাঁ তৈরি করেছিলেন।  (বর্তমানে এই দূর্গের কোনো চিহ্ন নেই।) আছে একটি মাটির টিবি, জঙ্গলের ভিতরে বিক্ষিপ্ত কিছু পাথরকুঁচি এবং একটি নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ।

এগারসিন্দুর দুর্গ
ছবিঃ শাহ মাহমুদ মসজিদ (কিশোরগঞ্জ জেলা ওয়েবসাইট

কিশোরগঞ্জ জেলার এগারসিন্দুর উপজেলায় দুটি মসজিদ রয়েছে। একটি শাহ মাহমুদ মসজিদ এবং অপরটি সাদী মসজিদ নামে পরিচিত। সাদী মসজিদ বাংলাদেশের অন্যতম সু-রক্ষিত মসজিদ ।

আরও আছে একটি লম্বা ইটের পাঁচিল দিয়ে ভাগ করা দুটি চত্বর। স্থানীয়দের কাছে পাঁচিলটি "প্রাসাদ প্রাচীর" নামে পরিচিত। কিশোরগঞ্জ-এর জঙ্গলবাড়ির দক্ষিণে রয়েছে একটি তোরন। আর তোরনের উত্তরে রয়েছে তিনগম্বুজ বিশিষ্ট একটি মসজিদ। মসজিদের স্থাপত্য দেখে বোঝা যায় মোগল প্রথাসিদ্ধ রীতির ছাপ রয়েছে।

শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান

ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্রের জন্য  কিশোরগঞ্জ জেলা বিখ্যাত। কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দ নদীর তীরে অবস্থিত শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যাবাহী ঈদগাহ ময়দান হলো কিশোরগঞ্জ জেলার শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান।
শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান
ছবিঃ শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান (ভ্রমন গাইড)

বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় কিশোরগঞ্জ জেলার শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ১৭৫০ সালে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদের জামাত আদায় করতে আসেন মুসুল্লীরা। সংবাদপত্রের রিপোর্ট থেকে জানা যায় প্রতিবছর ঈদ উৎসব উপলক্ষে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাতে অংশগ্রহণকারী মুসুল্লীদের সংখ্যা অন্তত তিনলক্ষ।

চন্দ্রাবতীর শিবমন্দির

কিশোরগঞ্জ জেলার মাইজ খাপন ইউনিয়নের কাচারিপাড়া গ্রামে ফুলেশ্বরী নদীর তীরে চন্দ্রাবতীর শিবমন্দিরটি অবস্থিত। এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন মধ্যযুগের প্রখ্যাত কবি চন্দ্রাবতী তথা বাংলার ১ম মহিলা কবির পিতা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রচুর দর্শনার্থীর আগমন ঘটে এই মনোরম সুন্দর মন্দিরটি দেখার জন্য।
চন্দ্রাবতীর শিবমন্দির
ছবিঃ চন্দ্রাবতীর শিবমন্দির (ভ্রমন গাইড


নৌ পর্যটনের জন্য কিশোরগঞ্জ জেলা বিখ্যাত। পর্যটকদের বিশেষ আকর্ষণ হাওড়ে নৌ ভ্রমণ। কিশোরগঞ্জ জেলা ভ্রমণের জন্য একটি অন্যতম আকর্ষনীয় স্থান। কিশোরগঞ্জ জেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে কয়েকটি নদ-নদী। যেমনঃ ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা, কালনী, ধনু, নরসুন্দা, মগড়া, ও বাওলাই। যে কারনে কিশোরগঞ্জ জেলা হয়ে উঠেছে এক নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতীক। 

প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর কিশোরগঞ্জ জেলা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ দৃশ্য দেখা যায় ইটনা, মিঠামইন ও নিকলী হাওড় ও বিল এলাকায়। যেনো কোনো চিত্রশিল্পী তার তুলির ছোঁয়ায় এমনভাবে এঁকে রেখেছেন।

কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে ধনু নদী। এই ইটনা উপজেলা থেকেই মূলতঃ হাওড় শুরু। হাওড়ের পূর্বদিকে সুরমা নদী। কিশোরগঞ্জ জেলার প্রতিটি হাওড়ই আকর্ষনীয় পর্যটন কেন্দ্র।

এছাড়াও গ্রামীণ, কৃষি ও স্থানীয় ঐতিহ্য যেমনঃ
  • পাগলা মসজিদ
  • সুকুমার রায়ের বাড়ি
  • জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ
  • দূর্জয় স্মৃতি ভাস্কর্য
  • মানব বাবুর বাড়ি
  • তালজাঙ্গা জমিদার বাড়ি 
  • নিকলীর বেড়িবাঁধ
  • নরসুন্দা লেক 
  • বৌলাই সাহেবের বাড়ি 
  • কুতুবশাহ মসজিদ

কিশোরগঞ্জ জেলা বিভিন্ন খাবারের জন্য বিখ্যাত। যেমনঃ
  • নারিকেল আর চিড়া 
  • বালিশ মিষ্টি 
  • চালকুমড়ার মোরব্বা 
  • নকশী পিঠা 
  • শীতকালীন ভাপা পিঠা 
  • কলা পিঠা 
  • চ্যাপা পিঠা 
  • গরুর মাংসের সামুচা 
  • চিতল পিঠা ও দুধ  চিতল পিঠা
  • মিডুড়ী
  • খুদের ভাত
  • পায়েস প্রভৃতি
কিশোরগঞ্জ জেলা হাওড়ের মিঠাপানির মাছের জন্য বিখ্যাত। সারাদেশ জুড়েই রয়েছে এই মিঠাপানির মাছের সুখ্যাতি। কিশোরগঞ্জ জেলা অনেক অনেক দিক দিয়ে বিখ্যাত একটি জেলা। এখানে প্রকাশিত কোনো তথ্য ভুল ভাবে মনে হলে বা কোনো তথ্য নতুন সংযোজনের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

এই ব্লগটি যদি আপনার কাজে লেগে থাকে বা আপনার উপকারে আসে তবেই আমাদের স্বার্থকতা। আপনাদের জানার চাহিদা মেটাতেই আমরা ব্লগিং করে থাকি। পরিচিত কাউকে এই তথ্য জানাতে শেয়ার করুন। উইকিজানা ব্লগে ফ্রীল্যান্সিং, এডুকেশন ও তথ্যমূলক ব্লগ প্রচার করে থাকে। আরো বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্লগ পড়তে নিচে স্ক্রল করুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কোনো প্রশ্ন থাকলে অনুগ্রহ করে বিস্তারিত ভাবে বলুন, আশা করি আমরা আপনাকে হেল্প করতে পারবো।তবে অনুগ্রহ করে স্পাম করবেন না।

All information presented on this website is collected from internet. We may make unintentional mistakes while writing the post. We sincerely apologize for any unpleasant mistakes and WikiJana.Com is not responsible for any incorrect information. If you see any incorrect information please let us know immediately. We will try to fix it as soon as possible. Click here to report.

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.